আমাদের দেশে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি শিল্পের মধ্যে চামড়া শিল্প দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। চামড়া একটি দেশের অর্থনীতির চালিকা শক্তি। ইটালি, স্পেন, চায়নাতে চামড়া রপ্তানি করে ট্যানার্স এসোসিয়েশন এবং সরকার ব্যাপক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে।
২০১৪ সালের পর থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়া শিল্পের ব্যাপক ধস নেমেছে। আন্তর্জাতিক বাজারেও আগের মতো বাংলাদেশের চামড়ার চাহিদা নেই। ফলে বিপাকে পড়েছে এ শিল্পের সাথে সম্পৃক্ত সকলেই। বিগত দুই বছর ধরে দেশের চামড়া শিল্প ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়েছে। এ নিয়ে বাংলাদেশ ট্যানার্স এসোসিয়েশন(বিটিএ) এবং বাংলাদেশ চামড়া শিল্প বলছে, ব্যাংক তাঁদেরকে যে পরিমাণ ঋণ দেয়ার কথা, সে পরিমাণ ঋণ গত বছর দেয়নি। গত বছর সংগঠনটি ঋণ পেয়েছে একশ পঁঞ্চাশ কোটি টাকা, ব্যাংকে তাঁদের পূর্বের বকেয়া ঋণ ছিল ছয়শ কোটি টাকা। যার কারণে তারা আড়তদারদের চামড়া ক্রয় করার জন্য উপযুক্ত টাকা দিতে পারেন নি। অন্যদিকে চামড়া সংগ্রহের জন্য মৌসুমী ব্যবসায়ীদেরকেও আড়তদাররা টাকা দিতে পারেনি। যে কারণে ২০১৯ সালের কোরবানী ঈদে চামড়া শিল্পে ভয়াবহ ধস নেমেছে। এ বছরও একই অবস্থা। দেশের চামড়া শিল্পের ইতিহাসে এমন দরপতন ৩১ বছর পর দেখলো জনগণ।
গত বছর কোরবানী ঈদে চামড়ার ন্যায্য দাম না পেয়ে দেশের অধিকাংশ স্থানে চামড়া রাস্তায় ফেলে এবং মাটিতে পুঁতে এর প্রতিবাদ জানিয়েছে মৌসুমী ব্যবসায়ী ও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। পথে বসেছেন চামড়ার ন্যায্য দাম না পেয়ে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। এরা তাঁদের ক্ষোভ ও আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন গণমাধ্যমে। ট্যানারি এসোসিয়েশন এবং চামড়া শিল্প সমিতির সিন্ডিকেটকে দুষছেন তাঁরা। দেশের অর্থনীতিকে যারা ধ্বংস করছেন তাঁরা দেশ ও জাতির শত্রুু। গরীব, অসহায়, এতিম, মিছকিনদের হক যারা নষ্ট করেছেন তারাও গরীবের দুশমন। এরা কোনোভাবেই ইহকাল ও পরকালে শান্তি পাবেনা। সরকারের উচিত চামড়া শিল্পকে ধ্বংস করার জন্য যারা সিন্ডিকেট করেছে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।