খুলনা মহানগরীর মিয়াপাড়া থেকে অপহরণ হওয়া এক শিশুকে মাত্র ১৮ ঘন্টার ব্যবধানে কুষ্টিয়া থেকে উদ্ধার করেছে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি)। অপহরণের সাথে জড়িত দম্পতিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বুধবার (১৫ জুলাই) বেলা ১২টার দিকে কেএমপি’র এক প্রেস ব্রিফিং-এ জানানো হয়, মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে টুটপাড়া মিয়াপাড়া এলাকার জনি মোল্যার চার বছরের কন্যা রাইছা আক্তার রোজাকে চকলেট খাওয়ানোর প্রলোভন দেখিয়ে তুলে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা। পার্শ্ববর্তি এক প্রতিবেশির মাধ্যমে জনি মোল্যার স্ত্রী নাসরিন বেগম বিষয়টি জানতে পারেন। তিনি বিভিন্ন জায়গায় খোজাখুজি করেও কোন হদিস না করতে পেরে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। এরপর নাসরিনের কাছে ২ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবী করে অপহরণকারীরা। সেই মোবাইল নম্বর ট্রাকিং করে মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে কুষ্টিয়া জেলার কাঞ্চনপুর এলাকা থেকে অপহৃত শিশু রোজাকে উদ্ধার করে পুলিশ।
এসময় অপহরণের সাথে জড়িত রুবিনা আক্তার (৪৫) ও তার স্বামী ফারুক বিশ্বাসকে (৪৭) গ্রেফতার করা হয়। কুষ্টিয়ার কাঞ্চনপুর এলাকার আবু তালেব বিশ্বাসের পুত্র গ্রেফতারকৃত ফারুক বিশ্বাস। সে ও তার স্ত্রীসহ একটি সংঘবদ্ধ চক্র বিভিন্ন জেলায় শিশু অপহরণের সাথে জড়িত।
শিশু রোজাকে নিজের কাছে ফিরে পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে কেঁদে ফেলে মা নাসরিন বেগম। তিনি পুলিশকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বলেন, পুলিশের এই ঋণ আমি শোধ করতে পারব না। তারা এত দ্রুত আমার মেয়েকে আমার কাছে ফিরিয়ে দেবে সেটা ভাবতে পারিনি।
কেএমপি’র ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) এম এম শাকিলুজ্জামান বলেন, দুই লাখ টাকা মুক্তিপন দাবি করে যে ফোন কলটি এসেছিল আমরা সেটা ট্রাকিং করে আসামীদের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হই। পরে দ্রুত সেখানে অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার ও আসামিদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হই। তিনি আরও বলেন, অপহরণকারীরা একটি সংঘবদ্ধ চক্র। এরা বিভিন্ন স্থানে ছদ্দবেশে ঘুড়ে বেড়ায় এবং নজরদারী করে। নানা অযুহাতে তারা যেকারও বাসায় ঢুকে যেতে পারে। এরপর সুযোগ বুঝে শিশুদের প্রলোভন দেখিয়ে অপহরণ করে। পুরো চক্রটিকে ধরার জন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
প্রেসব্রিফিং-এ উপস্থিত ছিলেন খুলনা সদর থানার সহকারী পুলিশ কমিশনার হাফিজুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশরাফুল আলমসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ। এঘটনায় খুলনা সদর থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করা হয়েছে।