ব্যক্তিজীবনে তিনি পেশাদার শিকারী ছিলেন। কাঁধে বন্দুক নিয়ে ৫০ সিসি’র মোটর সাইকেল ছুটিয়ে তিনি চলে যেতেন জঙ্গলে শিকারে। তখনও সব ধরণের শিকার আইনে অবৈধ হয় নি। শিকারের ব্যাপারে সিতেশ বাবু অন্যদেরও উদ্বুদ্ধ করতেন। দুর্ধ্বর্ষ শিকারি বেশ হিসাবে নাম ডাকও ছিল।
১৯৯১ সালে কমলগঞ্জ উপজেলার পত্রখোলা চা-বাগানে বন্য শুকরের উপদ্রব বেড়ে যায়। চা-বাগান কর্তৃপক্ষের আমন্ত্রণে তিনি ১৪ জানুয়ারি তীব্র শীত উপেক্ষা করে সারারাত ধরে দোনলা বন্দুক হাতে তিনি শিকার চালিয়ে যান। সে রাতেই ঘন জঙ্গলের সরু রাস্তায় প্রায় আট ফুট লম্বা একটা ভাল্লুকের সামনে গিয়ে পড়লেন। ভাল্লুকটি তাঁকে আক্রমণ করতে আসতেই তিনি বন্দুক তুললেন, কিন্তু তার আগেই ভালুকটির হিংস্র থাবায় তাঁর মুখের ডান দিক ছিন্নভিন্ন হয়ে গেলো।
সিতেশ বাবু হারালেন ডান চোখসহ গালের অনেকটা। শেষ মুহূর্তে ভাল্লুকটির মাথা লক্ষ করে গুলি করতে পারায় তাঁর শেষ রক্ষা হয়েছিল। টানা দুই মাস চিকিৎসা আর ২৯ ব্যাগ রক্তের পর সুস্থ হন তিনি।
সেই থেকেই শিকার ছেড়ে দেন তিনি। সিতেশ বাবু হয়ে ওঠেন পশুপ্রেমী। নিজে চিড়িয়াখানা দিলেন। সেখানে পশুদের পরিযর্যা করেন। এরপর আবার জঙ্গলে ছেড়ে দেন। পশুপাখি বাঁচানোর যে কোন উদ্যোগে তাঁকে পাওয়া যায় সবার আগে।
নিজের চিড়িয়াখানার প্রাণীদের রেখে তিনি শ্রীমঙ্গলের বাইরেও যান কম। ব্রিটিশ বন্ধুর আমন্ত্রণে লন্ডন গেলেও এক সপ্তাহের বেশি থাকেন না।
সব জায়গাতেই আমাদের আসলে অনেকজন সিতেশ বাবু দরকার।