ডুমুরিয়া (খুলনা) সংবাদদাতাঃখুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগর কলেজে নিয়ম বহির্ভূতভাবে ও জেষ্ঠ্যতা লঙ্ঘন করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা প্রভাষক মোঃ মনিরুল ইসলাম ব্রাউন।
বুধবার (৩০ডিসেম্বর) তাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। যাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে তিনি কলেজ শিক্ষকদের মধ্যে জেষ্ঠতার ক্ষেত্রে ১৬তম স্থানে রয়েছেন। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগের পরদিন বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে সরেজমিনে কলেজে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি।কলেজের অফিস ছিল তালাবদ্ধ। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে ডুমুরিয়ার চুকনগর কলেজের
তৎকালীন অধ্যক্ষ জেলা আওয়ামী লীগ নেতা এবিএম শফিকুল ইসলাম অবসর নেয়ার কথা থাকলেও তিনি জাতীয় বিশ্ব বিদ্যালয় হতে দুই বছর চাকুরীর মেয়াদ বৃদ্ধি করেন। পরে ২০১৮ সালে তিনি অবসরে গেলে জেষ্ঠ্য শিক্ষক হাশেম আলী ফকির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পান। তিনিও অবসরে গেলে ২০১৮ সালের ৯ জুলাই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পান জেলা যুবলীগ নেতা জুলফিকার আলী জুুলুূ। বুধবার তাকে সরিয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা প্রভাষক মো: মনিরুল ইসলাম ব্রাউনকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। অথচ এই কলেজে বেশ কয়েকজন সহকারি অধ্যাপক রয়েছেন।
নিয়ম অনুযায়ী জেষ্ঠতা ভিত্তিতে প্রথম ৫ জনের মধ্য থেকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ দেয়ার কথা। এক্ষেত্রে কেউ দায়িত্ব পালনে অপারগতা প্রকাশ করতে পারবেন না। দায়ীত্ব পালনে অপারগতা করলে তা অসদাচরণ হিসেবে গণ্য হবে। এ ক্ষেত্রে কলেজে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পেতে পারতেন সহকারি অধ্যাপক তাপস কুমার বিশ্বাস, সহকারি অধ্যাপক সাধন কুমার বসু, সহকারি অধ্যাপক শেখ এনামুল হক, সহকারি অধ্যাপক আব্দুল হাফিজ মাহমুদ ও সহকারি অধ্যাপক এম এম নাজমুল ইসলাম। কিন্তু যাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তিনি একজন জুনিয়র প্রভাষক। ক্রমনুসারে তার অবস্থান ১৩ তম। এছাড়া সরকারী বেতন প্রদানের এমপিও ( মান্থলি পেমেন্ট অর্ডারে) তে ১৬তম।
সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জুলফিকার আলী জুলু বলেন, আমার বিরুদ্ধে অসত্য অভিযোগ তুলে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে যাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তিনি অনেক জুনিয়র। এক্ষেত্রে কোন নিয়ম অনুসরন করা হয়নি।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো: মনিরুল ইসলাম ব্রাউন বলেন, সকল শিক্ষক ও কমিটির সম্মতিতে আমাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কলেজ বন্ধ থাকা প্রসঙ্গে বলেন, পিয়ন হয়ত দুপুুরে বাড়ি ভাত খেতে গেছে। তিনি আরো বলেন, শনিবার কলেজে সভা আহবান করা হয়েছে। এ বিষয়ে ডুমুরিয়া উপজেলার আটলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও শিক্ষা কমিটির সদস্য প্রতাপ কুমার রায় বলেন, ডুমুরিয়ার অধিকাংশ বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যাপক অনিয়মের মধ্য দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় চুকনগর কলেজেও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ দেয়া হল। এটি ন্যক্কারজনক।
চুকনগর কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, গভর্ণিং বডির সকল সদস্যের সম্মতিতে মো: মনিরুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে অধ্যক্ষ নিয়োগের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।