লতিফ মোড়ল,ডুমুরিয়াঃখুলানার ডুমুরিয়ায় কলেজ ছাত্র সুদর্শন রায় (২৫) হত্যা মামলায় ২ জনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। এ মামলার চার আসামীর মধ্যে এক আসামীকে খালাস দেওয়া হয়েছে।অপর এক আসামীর মামলার কার্যক্রম নারী ও শিশু আদালতে চলমান রয়েছে।
রবিবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে খুলনার অতিরিক্ত দায়রা জজ ১ ম আদালতের বিচারক মোঃ ইয়ারব হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, দ্রৌপদী বিশ্বাস (৪৫) ও কংকন বিশ্বাস। এ মামলায় বিপুল বিশ্বাসকে খালাস দেওয়া হয়েছে।অন্য আসামী লাভলী বিশ্বাস শিশু হওয়ায় নারী ও শিশু আদালতে মামলা বিচারাধীন রয়েছে বলে জানা গেছে।
মামলার বিবরণ ও আদালত সূত্রে জানা যায়, বটিয়াঘাটা থানার বুনোরাবাদ গ্রামের কলেজ ছাত্র সুদর্শন রায় ডুমুরিয়া থানার বড়ডাঙ্গা গ্রামে স্কুল শিক্ষক মামা দিনু মন্ডলের বাড়িতে থেকে পড়াশুনা করতো। এক পর্যায়ে সুদর্শনের সাথে ডুমুরিয়ার মির্জাপুর গ্রামের কলেজ ছাত্রী লাভলী বিশ্বাস (১৬) এর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০১৭ সালের ২০শে ফেব্রুয়ারী দিবাগত রাতে সুদর্শন ফুল আনতে যাওয়ার কথা বলে মামার বাড়ি থেকে বের হয়ে লাভলী’র বাড়ির পাশে একটি বাগানে এসে তার সাথে দেখা করার চেষ্টা করে। বিষয়টি টের পেয়ে লাভলী,তার মা দ্রৌপদী ও ভাই কংকন বিশ্বাস সুদর্শনকে ধরে বেঁধে পিটিয়ে ও শ্বাস রোধ করে হত্যা করে লাশ একটি ডোঙ্গায় করে বিলের বেঁড়ি বাঁধের উপর রেখে আসে।
এ ঘটনার পরদিন ২১ ফেব্রুয়ারী ‘১৭ তারিখে নিহত সুদর্শনের মামা দিনু মন্ডল বাদী হয়ে লাভলী,তার মা দ্রৌপদী বিশ্বাস,ভাই কংকন বিশ্বাস ও বাবা বিপুল বিশ্বাসসহ চার জনকে আসামী করে ডুমুরিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার তৎকালীন এস,আই বর্তমানে দামুড়হুদা থানায় কর্মরত পুলিশ পরিদর্শক কেরামত আলী দীর্ঘ তদন্ত শেষে মামলার আসামী দ্রৌপদী বিশ্বাস,কংকন বিশ্বাস এবং বিপুল বিশ্বাসের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। আসামী লাভলী বিশ্বাস শিশু হওয়ায় তার বিরুদ্ধে দোষীপত্র দাখিল করা হয় যা বর্তমানে নারী ও শিশু আদালত খুলনায় বিচারাধীন রয়েছে।
রোববার আদালত তার রায়ে দ্রৌপদী বিশ্বাসকে পেনাল কোডের ৩০২ ধারায় যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডের সাথে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ৬ মাসের সশ্রম কারাদন্ড এবং ২০১ ধারায় ৩ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ৩ মাসের সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া অপর আসামী কংকন বিশ্বাসকে পেনাল কোডের ৩০২ ধারায় যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডের সাথে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ৬ মাসের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়। আর বিপুল বিশ্বাসকে মামলার দায় থেকে খালাস দেওয়া হয়।
এ মামলায় রাস্ট্র পক্ষের কৌশুলি ছিলেন এম ইলিয়াস হোসেন এবং আসামী পক্ষের আইনজীবি ছিলেন সন্দীপ কুমার দাস।