ডুমুরিয়া(খুলনা)সংবাদদাতাঃখুলনার ডুমুরিয়ার লােকালয়ে গঁড়ে উঠেছে অবৈধ মিনি ইট ভাটা। দেদারসে পুড়ছে কাঠ, কালা ধোঁয়ায় দূষণ হচ্ছে পরিবেশ। বিষয়টি দেখার যেন কেউ নেই!
সরেজমিনে যেয়ে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, ডুমুরিয়া উপজলার ধামালিয়া ইউনিয়নের চেঁচুড়ি কে,বি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং চেঁচুড়ি কে,বি মাধ্যমিক বিদ্যালয় দু’টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘেষে পাড়া-মহল্লার ভিতর গড়ে উঠেছে এ সকল অবৈধ ইটভাটা। অপরদিকে রয়েছে এলাকার একমাত্র ভবদহ কলেজ।
অধিক মুনফা লাভের আশায়, বিগত কয়েক বছর যাবৎ ইট ভাটার মালিকরা আইন বিধি বিধানের তোয়াক্কা না করে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কােন দপ্তরের অনুমতি ছাড়াই চালিয়ে যাছেন ভাটায় ইট তৈরি ও পোড়ানোর কাজ। কয়লার পরিবর্তে পােড়ানো হচ্ছে নারকেল, শিরিশ, বাবলা, বাঁশ ও খেঁজুর গাছের গুঁড়ি। এর ফলে কাঠ পোড়ানো কালাে ধোঁয়ায় পরিবেশের মারাত্বক ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। অপরদিকে ফলদ ও বনজ গাছ কেটে সাবাড় করার কারণে প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রয়েছে চরম হুমকির মুখে। অন্য দিকে উজাড় করা হচ্ছে বনজ সম্পদ। ফলে মৌসুমী নারকেল ও খেঁজুর রসের চরম সংকট দেখা দিয়েছে ডুমুরিয়ার সর্বত্র। সরেজমিনে দেখা চেঁচুড়ি গ্রামের একটি মহাল্লার মধ্য দুটি বিদ্যালয় ও একটি কলেজ ঘেষে অন্তত ২০ টির অধিক ইট ভাটা গড়ে তোলা হয়েছে। স্হানীয় ভাষায় একে পাঁজাও বলা হয়। গ্রাম্য সংস্কৃতির কালে ভদ্রে কােন কোন ব্যক্তি বা গোষ্টি এমনি ভাবে ইট পুড়িয়ে বাড়ি তৈরী করে থাকতেন। এক যুগেরও অধিক কাল ধরে আইনের কোন তোয়াক্কা না করে এই এলাকায় ব্যবসার উদ্দশ্য অবৈধ ভাবে প্রতি বছর কােটি কােটি ইট তৈরী করে তা বিক্রি করে আসছে এলাকার কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি । চেঁচুড়ি কে,বি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চেঁচুড়ি কে,বি মাধ্যমিক বিদ্যালয়র পাশ ঘেষে মাত্র ২শ’ গজের ভিতর গড়ে উঠেছে ইট ভাটা গুলো। এছাড়া অতিরিক্ত লােড দিয়ে কাঁঠ ও ইট বহনের ফলে গ্রাম্য রাস্তা ধসে গিয়ে ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। এমন অভিযােগ করেন দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কয়েক জন শিক্ষক সহ স্হানীয় বাসিন্দারা।
একদিকে দেশে করোনা সংক্রমন পরিস্হিতি অন্যদিকে কাঠ পােড়ানাের কালাে ধােঁয়ায় কােমল মতি শিক্ষার্থী ও সাধারণ বাসিন্দরা প্রায়ই নানান অসুস্হতায় ভোগেন। অসিম পাল,মােহন পাল, বাসুদেব পাল,মহাদেব পাল, পঙ্কজ পাল, নকুল পাল, মিলন পাল, শুভাংকর পাল, ললিত পাল, সুবােল পাল, ভােলা পাল, অসীম পাল, শেখর পাল, লক্ষণ পাল, অমল পাল, পাল, পরশ পাল, সাধন পাল, বিষ্ণু পাল, যশােধর পাল, গৌতম পাল সহ আরাে অনেকে এই ২০ টির অধিক ভাটা পরিচালনা করছেন। জানতে চাইলে ভাটা মালিক অসিম পালসহ একাধিক মালিক এ প্রতিবেদক কে জানান, এক সময় তাদের পৈত্রিক পেশা ছিলো কুমার শিল্প যা এখন বিলুপ্তির পথে। তাই বিকল্প কর্মস্হানের ব্যবস্হা হিসেবে এবং চাহিদার কথা বিবেচনা করে ইট পোড়ানোর শুরু করেন তারা। কােন দপ্তরের অনুমতি ছাড়াই স্হানীয় প্রভাবশালী মটু পালের সহযোগিতায় বিভিন্ন জনকে ম্যানেজ করে তারা ইট ভাটার সকল কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। কােন সমস্যা দেখা দিলে তিনি সমস্যা দেখভাল করে থাকেন।
এ প্রসংগে জানতে চাইলে ডুমুরিয়া উপজলা নির্বাহী অফিসার মো: আবদুল ওয়াদুদ বলেন, বিষয়টি নিয়ে কেউ আমাকে কোন অভিযোগ করেনি। তবে নিয়ম নীতি অমান্য করে অবৈধ ভাবে পরিচালিত সকল ইটভাটার বিরুদ্ধে অচিরেই আইনগত ব্যবস্হা নেয়া হবে।